ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়

 

তিন দিনে ফর্সা হওয়ার উপায়

পরিষ্কার দাগহীন সুস্থ-সুন্দর ত্বক কে না চায় কিন্তু গ্রীস্মের এই সময়ে ত্বকের রোদে পোড়া ভাব হতে পারে খুবই অস্বস্তির কারণ।এছাড়াও আমাদের জীবনযাপনের বিভিন্ন রকম অসতর্কতা এবং অন্যান্য কারণেও দেখা দিতে পারে ত্বকে দাগ।অযত্নের কারণে বা রোদে পোড়ার কারনেও আমাদের মুখের সঙ্গে হাত বা পায়ের রঙের ভিন্নতা দেখা যায় এছাড়াও ত্বকে অতিরিক্ত ময়লা জমার কারণে ও যত্নের অভাবে ত্বকের উজ্জলতা হারিয়ে যায়।খুব সহজেই আমরা ঘরোয়াভাবে এই সমস্যাগুলোর সমাধান  পেয়ে যেতে  পারি, তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক ঘরে থাকা এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান দিয়ে এ ধরনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান।

 

মুলতানি মাটি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

মুখের ত্বকের যত্নের জন্যমুলতানি মাটি অনেক বেশি উপকারী।মুলতানি মাটি এক ধরনের মাটি জাতীয় রূপচর্চার উপাদান, এটি শুধু উজ্জলতায় বৃদ্ধি করে তা নয় এটি ত্বকে জীবানুনাশক (অ্যান্টিসেপটিক) হিসেবেও কাজ করে।তবে তকে ব্যবহারের আগে এই মুলতানি মাটি আসল কিনা জেনে নিতে হবে, এটি যদি পানিতে গোলানোর পর একটু ঘন হয়ে যায় তবে এটি অবশ্যই  আসল মুলতানি মাটি। মুলতানি মাটি ব্যবহারের জন্য প্রথমে একটি বাটিতে 1 টেবিল চামচ মুলতানি মাটি,1 টেবিল চামচ দুধ ও 1 টেবিল চামচ কাঁচা হলুদের রস ভালোভাবে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিয়ে মুখের ত্বকের ব্যবহার করতে হবে। এই পেস্টটি প্রতি সপ্তাহে একদিন করে 8 থেকে 10 মিনিট করে লাগিয়ে রাখতে হবে  তারপর ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই পেস্টটি প্রতি সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করলে মুখের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে ও সতেজ হয়ে উঠবে।

 

একদিনে ব্রণের দাগ দূর করার উপায় 

ত্বক নিয়ে সবথেকে বেশি চিন্তায় থাকে যারা ব্রণের দাগের সমস্যায় ভুক্তভোগী, তাই সবার ব্রনের দাগের সমস্যার রয়েছে ঘরোয়া সহজ সমাধান।প্রথমে দুই থেকে তিন ইঞ্চি পরিমাণ দারুচিনি ও লবঙ্গ পাঁচটি পরিষ্কার পানিতে ভিজিয়ে গুড়া পেস্ট করে নিতে হবে  তারপর মিশ্রণটি  মুখের ত্বকে 10 থেকে 15 মিনিট লাগিয়ে অপেক্ষা করতে হবে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই পেস্ট দিয়ে ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ চিরতরে দূর হয়ে যাবে এবং মুখকে ব্রণের দাগহীন সুন্দর করে তুলবে। 

 

রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার

কাঁচা হলুদে আছে কারকিউমিন,যেটি একটি জীবানুনাশক হিসেবে কাজ করে ত্বকে এছাড়াও কাঁচা হলুদের আছে এসেনশিয়াল অয়েল যেটি ত্বককে খুবই জুতো করে তোলে উজ্জল,টানটানএবং কালো দাগ মুক্ত।প্রথমে এক টেবিল চামচ লেবুর রস এর ভিতরে এক টেবিল চামচ কাঁচা হলুদ পেস্ট মিশিয়ে নিতে হবে,তারপর  পেস্টটি প্রথমে দাগ-যুক্ত স্থানে লাগাতে হবে এবং এরপর হাত পায়ের আঙুলে লাগিয়ে প্রায় 30 মিনিট পর লেবুর রস দিয়ে ঘষে তুলে ফেলতে হবে। এটি প্রতিদিন ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে দাগ মুক্ত উজ্জল। এছাড়াও আপনি নিয়মিত দুধ ও কাঁচা হলুদ মিশিয়ে মুখে দিলে এক সপ্তাহের মধ্যে আপনার মুখের উজ্জ্বলতা চোখে পড়ার মতো বৃদ্ধি পাবে। রূপচর্চায় দুধ ও কাঁচা হলুদের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। 

 

লেবু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

সহজলভ্য এক প্রাকৃতিক উপাদান হলো লেবু। লেবুর রস ব্যবহার করা যায় বেশ কয়েকটি নিয়মে।দুরন্ত ও কর্মব্যস্ত দিনে ঘরের বাইরে থেকে এসে ভালোভাবে ধুয়ে নিন হাত-পা ও মুখ, এরপর মাঝারি সাইজের একটি লেবু নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে খোসাসহ কেটে  নিয়ে ঘষে নিন হাত পা ও মুখে, এরপর 10 থেকে 15 মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে নিন ।এছাড়াও এক চামচ চীনের সাথে একটি লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে  ঘাড়ের ও হাত-পায়ের ভাজে ও এবং কাল হয়ে যাওয়া জায়গাগুলোতে লাগিয়ে 15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করে হালকা সহ্য করার মত গরম পানি দিয়ে ঘষে তুলে ফেলুন। এটি  হাত পা ও ঘাড়ের জন্য ন্যাচারাল স্ক্রাব এর কাজ করবে।এই দুই ধরনের মিশ্রণের যেকোনো একটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক হয়ে যাবে দাগহীন ও সুন্দর। 

 

ফেসপ্যাক বানানোর নিয়ম

ল্যাকটিক এসিড রয়েছে কাঁচা দুধে, এই এসিডের জন্য  লোমকূপের জমে থাকা ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।এছাড়াও ল্যাকটিক এসিড ত্বকের উজ্জ্বলতা অধিক মাত্রায় বাড়াতে সাহায্য করে ,তাই ত্বকে  উজ্জলতা আনতে একটি পরিষ্কার বাটিতে 1 টেবিল চামচ কাঁচা দুধ,1 টেবিল চামচ ভিনেগার ও 1 টেবিল চামচ ময়দা বা চালের গুড়া একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে, মূলত এটিকে ত্বকের এক ধরনের স্ক্রাবার ও বলা যায়।এই পেস্ট যদি প্রতি সপ্তাহে তিন দিন 5 মিনিট করে ত্বকে  মালিশ করা যায় তবে লোম কুপের ময়লা পরিষ্কার হয়ে খুব দ্রুত তকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে ত্বককে করে তুলবে বাচ্চাদের মত সুন্দর ও মসৃণ।

 

এলোভেরা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

রূপচর্চার জন্য অন্যতম সেরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান হলো অ্যালোভেরা  যেটি দিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায় পাশাপাশি শরীর  কাল হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা যায়। অ্যালোভেরা  ব্যবহারের জন্য প্রথমে একটি  অ্যালোভেরার স্টিক নিয়ে উপরে সবুজ অংশটি কেটে নিতে হবে এরপর ভেতরের জেলি একটি কাঁটা চামচ  এর সাহায্যে বের করে নিতে হবে, তারপর এলোভেরা জেল দিয়ে মুখে হাতে পায়ে এবং প্রয়োজনের শরীরের যেকোনো অংশে মারতে হবে, মাথার পরে প্রায় 30 মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। অ্যালোভেরা   নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বককে করে তুলবে মসৃণ টান টান উজ্জল  ও দাগ মুক্ত, এছাড়াও অ্যালোভেরা অনেক বেশি ঠান্ডা  রাখবে।

 

হাত পায়ের যত্নে অলিভ অয়েল 

প্রায় সবার ঘরে পাওয়া যায় অলিভ অয়েল এবং চিনি।অলিভ অয়েল, চীনের মিশ্রণটি ত্বকে দাগ সারাতে এবং  ত্বককে মসৃণ করতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল ও চিনি একসাথে মিশিয়ে গায় মেখে প্রায় আধাঘণ্টা রাখতে হবে একথা শুকানো পর্যন্ত সময় দিতে  হবে এবং শুকিয়ে গেলে ভালোভাবে ঘষতে হবে তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালোভাবে গোসল করে নিতে হবে।  অলিভ অয়েল ও চিনির এই মিশ্রণটি প্রতি সপ্তাহে একবার মাখলে শরীরের সকল দাগ দূর হয়ে যাবে পাশাপাশি ত্বককে করে তুলবে আরো বেশি  উজ্জল।

 

রূপচর্চায় কেন প্রাকৃতিক উপাদান?

ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপাদানে রূপচর্চা করলে দেখা যায় শরীরের ত্বকের উজ্জলতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় এবং  শরীরের এলার্জির সমস্যা বা ব্রণ হওয়া এবং অন্যান্য যেকোনো সমস্যা হয়না, কারণ প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপাদানে কোন প্রকার কেমিক্যাল যুক্ত থাকে না, তাই প্রত্যেকেরই উচিত ঘরোয়া উপাদানে তৈরি  পেজগুলো দিয়ে রূপচর্চা করা।

 

আমাদের এই সাইটে নিয়মিত শিক্ষা বিষয়ক,  স্বাস্থ্য ও রূপচর্চা নিয়ে নিয়মিত পোস্ট করা হয়,  আমাদের পোস্টগুলো নিয়মিত দেখতে আমাদের সাইটটি  ফলো করুন এবং কমেন্ট করে আপনাদের মন্তব্য জানান।