সকল রোগের মহা ঔষধ কালো জিরার উপকারিতা ও অপকারিতা

কালো জিরার উপকারিতা 

আমাদের বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কালোজিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন সকালে চার-পাঁচটি কালোজিরার বীজ খেলে যে কোন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে,  তবে গবেষণায় দেখা গেছে কালোজিরার চেয়ে কালোজিরার তেল অনেক বেশি উপকারী। কালোজিরা তেলে রয়েছে অসংখ্য পুষ্টি ও ভিটামিন এর সংমিশ্রণে এতে রয়েছে ম্যাংগানিজ কপার আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম জিংক ইত্যাদি। কালোজিরা একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার,  কালোজিরার ভর্তা সর্বজন গৃহীত,  এছাড়াও মানুষ বিভিন্ন উপায়ে কালোজিরা খেয়ে থাকে যেমন তরকারিতে, ডালে, বা চায়ের  কাপে।

রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়

প্রতিদিন নিয়ম করে কালোজিরা খেলে, রক্তে অস্বাস্থ্য কোলেস্টরেল কমে যায়। স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল বেড়ে যায়, মনে রাখতে হবে কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে, তাই সঠিক মাত্রার কোলেস্টেরল রাখতে নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার ব্যতিক্রম নেই।  এছাড়া নিয়মিত রক্ত দানের মাধ্যমে আমরা কোলেস্টরেল ভালো রাখতে পারি,

 

পুরুষের শক্তি বৃদ্ধি করে

প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে 1 চা চামচ মধুর সাথে কালোজিরা খেলে দুর্বল পুরুষের শক্তি বৃদ্ধি পায়। শরীরে দূর্বলতা বৃদ্ধি পেলে অলসতা বৃদ্ধি পায় এবং বেশি বেশি ঘুম পায়,  সে ক্ষেত্রে নিয়ম নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের দুর্বলতা কমে যায় এবং শক্তি বৃদ্ধি পায়।   প্রতিদিন সকালবেলা আট থেকে দশটি কালোজিরার বীজ খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়,  দুর্বল বাচ্চাদের নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ালে বাচ্চা সতেজ এবং শক্তিশালী হয়। যে সকল পুরুষের  গোপন রোগ রয়েছে কালোজিরা নিয়মিত খেলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালবেলা 1 চা চামচ মধুর সাথে অল্প কিছু কালোজিরা মিশিয়ে খালি পেটে এক মাস খেতে হবে।

 

চোখের সমস্যা সমাধান

অনেকেই বিভিন্ন রকম চোখের সমস্যায় ভোগে যেমন দূরের জিনিস চোখে দেখেনা, বা বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকলে চোখ ব্যথা করে,  চোখ লাল হয়ে যাওয়া। এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা, যাদের চোখে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত কালোজিরা খেতে পারেন।  বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে চোখের সমস্যা সমাধানের কালোজিরা  খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

কিডনি ভালো

আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে তিনি অন্যতম এটি আমাদের শরীরে ফিল্টার হিসেবে কাজ করে।  বর্তমান অধিকাংশ মানুষই কিডনি সমস্যায় ভোগে, অনেকেই কিডনি সমস্যায় মারা যান, বেঁচে থাকলেও অনেক ব্যয় হয় চিকিৎসার পেছনে। কিন্তু আমরা যদি প্রতিদিন সকালবেলা কালোজিরা খায় সে ক্ষেত্রে আমাদের কিডনি ভালো থাকবে। 

 

মস্তিষ্ক  তীক্ষ্ণ করে

ছাত্র-ছাত্রী তীক্ষ্ণ করতে কালোজিরা অতুলনীয়, এক চামচ মধুর সাথে আট-দশটি কালোজিরা মিশিয়ে প্রতিদিন সকালবেলা খেলে মস্তিস্ক অনেক তীক্ষ্ণ হয়। বিভিন্ন বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে সকল বাচ্চাদের মেধা খুবই কম তাদেরকে নিয়মিত কালোজিরা এবং মধুর খাওয়ানোর পরে বিস্ময়কর উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

 

রক্তচাপ কমায়

কালোজিরার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে, আমার আমাদের যাদের হাইপ্রেশার তাদের নিয়ম করে কালোজিরা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বর্তমান সময়ে হাইপ্রেশার বা উচ্চরক্তচাপ সবচেয়ে আলোচিত সমস্যা। অধিকাংশ মানুষই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা নিয়ে,  সেক্ষেত্রে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন সকালবেলা নিয়মিত কালোজিরা খেতে হবে।

 

হাপানি বা এজমা থেকে চিরমুক্তি

যারা দীর্ঘদিন ধরে হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত তারা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা নিয়ে হতাশ। এরকম হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগের স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই, কিন্তু ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল, যেকোনো হাঁপানি বা অ্যাজমা রোগী প্রতিদিন সকালবেলা মধুর সাথে কালোজিরা মিশিয়ে খেলে হাঁপানি বা অ্যাজমা থেকে চির মুক্তি মিলতে পারে।

 

মাথাব্যথা  কমায়

কালোজিরা মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে, যাদের সাইনোসাইটিস বা মাইগ্রেনের সমস্যা আছে তারা নিয়মিত কালোজিরা খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

 

কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম

প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে আট-দশটি কালোজিরা  এক গ্লাস পানির সাথে খালি পেটে খেলে ভালো উপকারিতা পাওয়া যায়।  এছাড়া প্রতিদিন কালোজিরা ভাতের সাথে ও গরম চায়ে ছেলে খুব ভালো উপকারিতা পেতে পারেন,  যেসকল পুরুষের শারীরিক সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালবেলা একটা মধুর সাথে আট-দশটি কালোজিরা খালি পেটে খেলে সমস্যা  দূর হবে।  প্রতিদিন সকালবেলা এক চামচ মধুর সাথে কয়েকটি কালোজিরার দানা খেলে নারী-পুরুষ উভয়েরই শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি হয়।

 

কালো জিরার অপকারিতা

যদিও কালোজিরা কালোজিরার অনেক উপকারিতা রয়েছে, তার পরেও অত্যাধিক কালোজিরা গ্রহণের ফলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। অতিরিক্ত কালোজিরা গ্রহণের ফলে কিডনি বা যকৃতের সমস্যা হতে পারে, এছাড়াও গর্ভবতী নারীদের ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কালোজিরা খাওয়া যাবেনা।